প্রিন্ট এর তারিখঃ Apr 26, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Apr 12, 2025 ইং
হাওরে বোরো ধান কাটার উৎসব, হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে

মোঃ মীরজাহান মিজান
জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হাওরের মাঠজুড়ে এখন বোরো ধান কাটার ধুম। পাকা ধানের সোনালি রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে চারদিক, আর সেই সঙ্গে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে প্রশান্তির হাসি। জমির ধান ঘরে তোলার প্রতিযোগিতায় যেন সবাই একসাথে নেমে পড়েছেন। কেউ শ্রমিক নিয়ে, কেউবা হারভেস্টার মেশিনে মাঠে নেমেছেন ধান কাটতে।
হাওরের মাঠে এখন পর্যন্ত কাজ করছে ৭৪টি হারভেস্টার মেশিন। প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক ধান কাটার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রকৃতি সহায় থাকলে খুব দ্রুতই ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী কৃষকেরা। ধান কাটা থেকে শুরু করে মাড়াই, শুকানো, গোলায় তোলা—সবকিছু নিয়েই কৃষকদের মাঝে বিরাজ করছে এক ধরনের প্রতিযোগিতা, এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
এই সময়ে অনেক কৃষককে দেখা যাচ্ছে হাওর থেকেই মাড়াই করা কাঁচা ধান কম দামে বিক্রি করতে। খরচ চালাতে গিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বলে জানালেন কয়েকজন কৃষক।
১২ এপ্রিল, শনিবার নারিকেলতলা নয়াবন্দ হাওরে গিয়ে দেখা যায়, হারভেস্টার মেশিন ও শ্রমিকরা ধান কাটার কাজে ব্যস্ত। কৃষক এনামুল হক জানান, কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে কিছুটা ক্ষতি হলেও ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, “যতটুকু পেয়েছি তাতে আমি সন্তুষ্ট। তবে এবার পরিবহন খরচ অনেক বেশি মনে হচ্ছে।”
হাওরের অন্যান্য কৃষকেরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন হারভেস্টার দিয়ে ধান কেটে বস্তাবন্দি করার কাজে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, এ বছর আবাদকৃত জমির পরিমাণ আগের চেয়ে বেশি, ফলে ফলনও ভালো হয়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলার সব হাওর ও বাওর মিলিয়ে মোট ২০ হাজার ৪২৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। সরকারিভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন। সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় ফলন সন্তোষজনক হয়েছে।
স্থানীয় ৫২টি এবং বহিরাগত ২২টি হারভেস্টার মেশিন কাজ করছে হাওরে। এছাড়া স্থানীয় ৯ হাজার ও বাইরের ৬ হাজার শ্রমিক মিলে প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক মাঠে কাজ করছেন।
অন্যদিকে, অনেক কৃষকের দাবি, সরকারি হিসেবের চেয়েও বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে, তাই ধানও পাওয়া যাবে আরও বেশি।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Todaysylhet24.com